জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদে চুন্নুর বদলে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
প্রতিবেদন: নিজস্ব প্রতিবেদক | Finix News
দীর্ঘদিনের বিরোধ ও নেতৃত্ব নিয়ে সংকটের মধ্যে দিয়ে যাওয়া জাতীয় পার্টিতে বড় রদবদল ঘটেছে। দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের মহাসচিব পদ থেকে মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে এই তথ্য জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী।
🔻 ভাঙনের মুখে জাতীয় পার্টি:
স্বৈরাচারী সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বারবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। নব্বইয়ের গণআন্দোলনের পর, এরশাদের মৃত্যুর পর, এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে দল ভেঙে আলাদা অংশ গঠনের ঘটনা—সবই দলটির অভ্যন্তরীণ সংকটের প্রমাণ।
🔻 চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পেছনে বিদ্রোহ:
গত ২৮ জুন জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন জিএম কাদের। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে একটি বড় অংশ তখন থেকেই নতুন নেতৃত্বের পক্ষে অবস্থান নেয়। কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব হিসেবে চায় একটি বলয়। মহাসচিব চুন্নুও এই বিদ্রোহী বলয়ের সঙ্গে যুক্ত হন।
এই চাপের মুখে সম্মেলন ভ্যেনু সংকটের অজুহাতে স্থগিত করেন জিএম কাদের। অন্যদিকে বিদ্রোহী পক্ষ কাউন্সিল আয়োজনের জন্য আলটিমেটাম দেয় এবং নতুন কমিটি গঠনের হুমকিও দেয়।
🔻 চুন্নুকে সরিয়ে শক্ত অবস্থান:
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জিএম কাদের চুন্নুকে সরিয়ে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ব্যারিস্টার পাটোয়ারী দলের ভেতরে একটি নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ধরে রেখেছেন এবং কাদেরের বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত।
🔻 ফের ভাঙনের আশঙ্কা:
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই দ্বন্দ্ব নিরসন না হয়, তাহলে জাতীয় পার্টি সপ্তমবারের মতো ভাঙনের মুখে পড়তে পারে। বিশেষ করে রওশন এরশাদপন্থী ও আনিসুল-মাহমুদ বলয় যদি সম্মিলিতভাবে পাল্টা কাউন্সিল করে, তাহলে দল বিভক্তির চূড়ান্ত রূপ পেতে পারে।