দ্রুতই বাড়ছে তিস্তা ও ধরলার পানি, খুলে দেওয়া হয়েছে ৪৪ জলকপাট, বন্যা আশঙ্কায় কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাটের মানুষ।
Finix News Desk
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার | সময়: দুপুর ১:৫০
উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণের কারণে উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদ-নদী তিস্তা ও ধরলার পানি হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে তিস্তা ও ধরলার তীরবর্তী গ্রামগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
রবিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ০৮ মিটার, যা বিপৎসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ধরলা নদীতেও পানি ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, আশ্রয়ে যেতে শুরু করেছে মানুষ:
ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অভ্যন্তরীণ ভারি বর্ষণের ফলে নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের শত শত একর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ধানের বীজতলা।
বন্যার আশঙ্কায় নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বাসিন্দারা রাত জেগে সময় পার করছেন। কেউ কেউ গবাদিপশু নিয়ে উঁচু স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে তারা।
বিপাকে লালমনিরহাটের ৪ উপজেলা, তিস্তার জলে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল:
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ১০টি চরাঞ্চলে পানি ঢুকেছে। পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন ও মহিষখোঁচা এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন,
“উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি পানি রয়েছে। যেকোনো সময় তা অতিক্রম করতে পারে।”
তিস্তা ব্যারাজের পানি নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান,
“পানির গতি ও পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”
কুড়িগ্রামে ধরলার পানি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে:
এদিকে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী, রাজারহাট, উলিপুর, সদরসহ একাধিক উপজেলায় ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেকে। বিশেষ করে ধরলার পানি ফুলবাড়ী উপজেলার চরাঞ্চলে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান,
“ধরলার পানি ফুলবাড়ী ও চিলমারীর দিকে দ্রুত প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”
প্রস্তুত স্থানীয় প্রশাসন, সতর্ক বার্তা জারি:
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি ত্রাণ ও উদ্ধার দল প্রস্তুত রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মাধ্যমে জনগণকে সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর পানিবৃদ্ধি জনজীবনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বৃষ্টিপাত ও উজানের পানির প্রবাহ অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
📰 সূত্র: জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড
📢 Finix News – সত্য বলার সাহস
🌐 www.finixnews.com
🔗 আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া লিংক:
✅ সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন ও মন্তব্য করুন। আপনার মতামতই আমাদের শক্তি।
📲 Finix News | সত্যের সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।