ভালোবাসার ভ্যান: ভূরুঙ্গামারীর সোনাতুলিতে তমসের নানার ‘স্কুল সার্ভিস’ এখন এলাকার আশীর্বাদ।
📍 ভূরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম | প্রতিবেদক, Finix News | ২৯ জুন ২০২৫
প্রযুক্তি আর যান্ত্রিকতার এই যুগে এখনো কিছু ভালোবাসা থাকে নিঃস্বার্থ, কিছু সম্পর্ক হয় আত্মার, আর কিছু মানুষ হয়ে ওঠে আলোকবর্তিকা। তেমনি একজন মানুষ হলেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাতুলি এলাকার তমসের আলী—একজন বৃদ্ধ নানা, যিনি শুধু নিজের নাতিকেই নয়, ভালোবাসেন এলাকার শিশুদের ভবিষ্যৎকেও।
তমসের আলীর নাতনি পড়ে সোনাতুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে। প্রতিদিন সকালে নিজের ছোট্ট ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে করে তিনি নাতিকে স্কুলে পৌঁছে দেন এবং ছুটির পর আবার বাসায় নিয়ে আসেন। কিন্তু এই যাত্রায় তিনি একা থাকেন না—ভ্যানে জায়গা পায় আরও অন্তত ১০-১২ জন স্কুলপড়ুয়া শিশু। কেউ কোনো ভাড়া দেয় না, কেউ কোনো দাবি তোলে না। এ যেন এক “ভালোবাসার ভ্যান”, যেখানে উঠতে টিকিট লাগে না—লাগে শুধু মানবতা আর শিশুর হাসি।
তমসের আলী বলেন,
“নাতনিকে একা যেতে দিলে মনটা কেমন কেমন করে। ওর বন্ধুরাও আশপাশে থাকে, তাই যখন নিয়ে যাই, সবাই মিলে যায়। আমি তো খুশিই হই।”
এ দৃশ্য এখন প্রতিদিনের। সকাল হলেই বাড়ির সামনে জমে ওঠে কচিকাঁচার কোলাহল, আর শুরু হয় সেই হাসিমুখে ভ্যানচালকের স্কুলযাত্রা। বাচ্চারা বলে, “নানুর ভ্যানে স্কুলে যেতে খুব ভালো লাগে, ভিড় করে গেলেও মজা পাই!”
স্থানীয় এক অভিভাবক বলেন,
“এমন মানুষ সমাজে খুব কম আছে। উনি নিজের নাতির দায়িত্ব নিতে গিয়ে পুরো এলাকার বাচ্চাদের আশীর্বাদ হয়ে উঠেছেন।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ইতোমধ্যে এই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ তমসের আলীর নিঃস্বার্থ এই মানবিকতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন। অনেকেই লিখেছেন—এই ভালোবাসা নিয়েই গড়ে উঠুক আগামীর বাংলাদেশ।
সমাজের প্রতিটি কোণায় যদি এমন একটি তমসের আলী থাকতো, তবে শিশুদের পথ হয়তো আরও একটু সহজ হতো।
📨 আপনার এলাকাতেও যদি এমন মানবিক গল্প থাকে, জানান আমাদের — Finix News সবসময় আছে আলোর পাশে।