বিজনেস ভিসায় ঢুকছে ভারতীয় ‘লাগেজ পার্টি’, বিকালে ফিরে যাচ্ছে! হচ্ছে কোটি টাকার চোরাচালান।
📅 প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২৫
বেনাপোল প্রতিনিধি | Finix News
যখন বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট বা বিজনেস ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন প্রতিদিন শত শত ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশের কলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশন থেকে বিজনেস ভিসা পেয়ে বেনাপোলে প্রবেশ করছেন।
তারা সকালেই সীমান্ত পার হয়ে এসে বিকেলের মধ্যে ফিরে যাচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে এদেরকে ‘লাগেজ পার্টি’ নামে ডাকা হয়।
কীভাবে চলছে এই কারবার?
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভারতীয় এসব যাত্রীদের হাতে রয়েছে ব্যাগভর্তি সামগ্রী—যার মধ্যে রয়েছে:
- ভারতীয় কম্বল
- মোবাইল ফোন
- বিদেশি মদ ও বিয়ার
- শাড়ি, থ্রিপিস
- চকলেট ও ফুচকা
- তৈরি পোশাক
- কসমেটিকস
এইসব পণ্য বেনাপোল চেকপোস্টের আশেপাশে দোকানে বিক্রি করে তারা নগদ অর্থ সংগ্রহ করে ফিরে যাচ্ছেন ভারতে।
নারী-পুরুষ ক্রেতার ভিড়:
এইসব মালামাল কেনার জন্য প্রতিদিন যশোর, খুলনা, চাঁদপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে শত শত নারী-পুরুষ ক্রেতা ভিড় করছেন বেনাপোলে। চোরাকারবারীরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারছেন প্রশাসনের সহযোগিতায়—এমন অভিযোগও উঠেছে।
দেশীয় শিল্প ও রাজস্ব হুমকিতে:
এই চোরাচালানি কার্যক্রমের ফলে:
- দেশীয় উৎপাদন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
- সরকার কোটি কোটি টাকার শুল্ক হারাচ্ছে
- অসাধু আমদানি বিকাশ পাচ্ছে, বাজার অস্থিতিশীল হচ্ছে
পরিসংখ্যান যা চমকে দেবে:
ইমিগ্রেশন সূত্র অনুযায়ী,
🔹 মে ২০২৫ মাসে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে মোট ২৫,৬৭৮ জন ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেছেন।
🔹 এর মধ্যে বিজনেস ভিসা নিয়ে চোরাচালান সংশ্লিষ্ট যাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৪,০০০ জন।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
🛃 কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলেন—
“আমরা মালামাল আটক করে ডেলিভারি মেমো (ডিএম) দিচ্ছি। শুল্ক দিয়ে তা ছাড় করাতে হচ্ছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
বিজিবি ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান—
“বিজিবি দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার অবৈধ পণ্য আটক করা হচ্ছে।
এ চোরাচালানে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় শিল্প।”
বিশ্লেষণ ও উদ্বেগ:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সাথে অসম ভিসা নীতি এবং উপ-হাইকমিশনের অতিমাত্রায় ঢিলেঢালা ভিসা ব্যবস্থা বাংলাদেশকে অসম প্রতিযোগিতার মুখে ফেলছে। এর ফলে বৈধ আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আর স্থানীয় ব্যবসার স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে।