টিকটকে প্রেমে, চীন থেকে মাদারীপুরে সিতিয়ান জিং! বিয়ে করলেন তরুণী সুমাইয়াকে।
Finix News Desk | মাদারীপুর
🗓 প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২৫ ইং
প্রেমের টানে সুদূর চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন সিতিয়ান জিং (২৬) নামে এক তরুণ।
গত ২৬ জুলাই তিনি মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার উত্তর মহিষেরচর এলাকায় এসে বিয়ে করেন স্থানীয় কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তারকে (১৯)।
এখন তিনি অবস্থান করছেন শ্বশুরবাড়িতেই।
ঘটনাটি জানাজানি হতেই গ্রামজুড়ে দেখা দেয় কৌতূহল। ভিনদেশি জামাতাকে এক নজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কারা এই সুমাইয়া আক্তার ও সিতিয়ান জিং:
- সুমাইয়া আক্তার: মাদারীপুর সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
- তার পরিবার: বাবা সাইদুর মুন্সি একজন মাঝি, নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিন বোনের মধ্যে সুমাইয়া বড়।
- সিতিয়ান জিং: চীনের সাংহাই শহরের বাসিন্দা। পেশায় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। বাবা-মা ও ভাইয়ের সাথে সাংহাইয়ে থাকেন।
টিকটক থেকে শুরু প্রেম:
সুমাইয়া আক্তার জানিয়েছেন, টিকটকে সিতিয়ান জিংয়ের ভিডিও দেখে প্রথমে ভক্ত হন তিনি। এরপর ইউটার্চ (Utarch) নামক একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। অনুবাদ অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের যোগাযোগ চলতে থাকে।
চার মাসের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সুমাইয়া বলেন,
“ও প্লেনে উঠার সময় বলেছিল বাংলাদেশে আসছে। আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি। কিন্তু ইন্ডিয়া পৌঁছানোর পর ও জানালে আমি নিশ্চিত হই।”
বাংলাদেশে এসে ঘরোয়া আয়োজনে বিয়ে:
২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশে এসে একদিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকার পর ২৬ জুলাই সুমাইয়ার বাবার সহায়তায় মাদারীপুরে আসেন সিতিয়ান জিং।
এরপর ২৭ জুলাই ঘরোয়া আয়োজনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের খবর পেয়ে আশপাশের গ্রামের মানুষজন তাদের বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন। অনেকেই জানান, জীবনে প্রথমবার সামনাসামনি কোনো চীনা নাগরিককে দেখলেন তারা।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
সুমাইয়ার বাবা সাইদুর মুন্সি বলেন,
“আমার মেয়ের সাথে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হয়েছিল। ছেলে ভালো, অহংকার নেই। সে এক মাস এখানে থাকবে, তারপর মেয়েকে নিয়ে যাবে।”
প্রতিবেশী জুলেখা বেগম বলেন,
“আমরা প্রথমবার চীনের মানুষ দেখলাম। ছেলেটি হেসে-হেসে কথা বলে। সুমাইয়াকে ভালোবেসে এতদূর এসেছে, এতে আমরা খুশি।”
সিতিয়ান জিংয়ের বক্তব্য:
সিতিয়ান জিং জানান,
“বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে, যদিও আবহাওয়া গরম। তবে অনেক মানুষ দেখতে আসায় মাঝে মাঝে ভয় লাগে। আমি সুমাইয়াকে ভালোবেসে এখানে এসেছি। আমার পরিবার সব জানে, তারা সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।”
ভিসা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
ইতিমধ্যে সুমাইয়ার পাসপোর্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পন্ন হলে সিতিয়ান জিং তাকে নিয়ে চীনে ফিরে যাবেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রতিক্রিয়া:
পাঁচখোলা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রুবেল হাওলাদার জানান,
“প্রথমে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে হয়েছে, পরে সামাজিকভাবেও আয়োজন করা হয়েছে। শুনেছি ছেলেটির ব্যবসা আছে। কিছুদিনের মধ্যে মেয়েটিকে চীনে নিয়ে যাবে।”
টিকটকের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই প্রেমের গল্প এখন মাদারীপুরের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। গ্রামবাসী যেমন কৌতূহলী, তেমনি খুশিও হয়েছেন এমন এক ব্যতিক্রমী প্রেম-বিয়ের ঘটনায়।
আরও পড়ুন:
- জয়ার বাগানে ফল ধরেছে, আনন্দে উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী।
- নারী অভিনেত্রীর অন্ধকার জীবনের গল্প, চলচ্চিত্রসম উত্থান-পতন!
Finix News – সত্য বলার সাহস
www.finixnews.com
আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া লিংক:
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন ও মন্তব্য করুন। আপনার মতামতই আমাদের শক্তি।
Finix News | সত্যের সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।