Sunday, June 29, 2025
Homeবিশ্বচীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনার দাবি স্পষ্ট করলো ইরান।

চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনার দাবি স্পষ্ট করলো ইরান।

ইরান চীনের কাছ থেকে যুদ্ধবিমান কেনার গুজব প্রত্যাখ্যান করল, সংবাদমাধ্যমকে সতর্ক থাকার আহ্বান।

ফিনিক্স নিউজ ডেস্ক : প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২৫

তেহরান/বেইজিং – সম্প্রতি কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ইরান ও চীনের মধ্যে আধুনিক যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে আলোচনা চলছে। ইরান এই সংবাদকে “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন” এবং “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার” বলে অভিহিত করেছে।

বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম চীনের একটি উৎসের বরাত দিয়ে দাবি করে, ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ যুদ্ধবিমান কেনার আলোচনা করতে বেইজিং সফরে যান। কিন্তু তেহরানভিত্তিক মেহের নিউজের তথ্যমতে, একটি নির্ভরযোগ্য ইরানি সূত্র এই দাবি সরাসরি অস্বীকার করেছে এবং এটিকে “ইহুদি রাষ্ট্রের তৈরি ভুয়া প্রচারণা” হিসেবে অভিহিত করেছে। (Mehr News)

চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনার দাবি স্পষ্ট করলো ইরান।
চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনার দাবি স্পষ্ট করলো ইরান।

বেইজিং সফরের প্রকৃত উদ্দেশ্য:

ইসরায়েল-ইরান ১২ দিনের সামরিক সংঘর্ষের পরপরই প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে চীন সফর করেন। সেখানে তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা—অস্ত্র চুক্তি নয়।

একজন সূত্র জানিয়েছেন, “চীনে আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সফর ছিল বহু-পাক্ষিক কূটনীতির অংশ। যুদ্ধবিমান কেনার কোনো আলোচনা হয়নি।”

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও গুজবের উৎপত্তি:

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এবং ইরান-চীন-রাশিয়ার সহযোগিতা বাড়ার সাথে সাথে গুজবও ছড়ায় যে ইরান তার পুরাতন বিমানবহর আধুনিক করতে চায়। জুহাই এয়ারশোতে ইরানি কর্মকর্তারা J-10C যুদ্ধবিমান পরিদর্শন করেন, যা গুজবকে আরও উস্কে দেয়।

তবে কোনো সরকারিভাবে যুদ্ধবিমান চুক্তির ঘোষণা এখনো দেওয়া হয়নি।

ইরান-চীন সামরিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিত:

১৯৮০–৯০ দশকে ইরান-চীন সামরিক সম্পর্ক সক্রিয় থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে বড় অস্ত্র চুক্তি খুব কম হয়েছে। ২০২১ সালে দুই দেশের মধ্যে ২৫ বছরের কৌশলগত চুক্তি সই হয়, যেখানে প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি স্থানান্তর থাকলেও যুদ্ধবিমান কেনার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। (DefenseWorld)

চীনের অবস্থান ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে নিরপেক্ষ। তারা সংযমের আহ্বান জানালেও ইরানকে সরাসরি অস্ত্র সহায়তা দেয়নি। (WSJ Coverage)

ইরানের সামরিক কৌশল ও স্বনির্ভরতা:

ইরান সামরিক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীলতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা ড্রোন প্রযুক্তি, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও বৈদ্যুতিন যুদ্ধ সক্ষমতায় বিনিয়োগ করছে। তারা সম্প্রতি রাশিয়ার Su-35 যুদ্ধবিমান কেনার কথা ঘোষণা দিয়েছে, যদিও সরবরাহের সময় নির্দিষ্ট নয় (WikipediaReddit)।

“আমরা কোনো গুজব বা চাপের কারণে যুদ্ধবিমান কিনছি না,” বলেন ইরানি কর্মকর্তা। “আমাদের কৌশল নির্ভর করে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা ও নির্বাচিত কৌশলগত সহযোগিতার উপর।”

সাংবাদিকতার দায়িত্বশীলতা নিয়ে আহ্বান:

তেহরান আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে যাচাই না করে ভুয়া খবর প্রকাশ না করার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, ভুল তথ্য ছড়ালে কূটনৈতিক সংকট বাড়তে পারে এবং জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

“সংবাদমাধ্যম যেন যাচাই-বাছাই ছাড়া খবর প্রকাশ না করে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,” এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

মধ্যপ্রাচ্যে যখন উত্তেজনা চরমে, তখন এমন গুজব বহুদূর পর্যন্ত প্রভাব ফেলতে পারে। ইরান-চীন যুদ্ধবিমান আলোচনা নিয়ে প্রকাশিত খবরে ইরান সরকার যে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে, তা স্পষ্ট করে যে তথ্যনির্ভর ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

ফিনিক্স নিউজ | সত্যের পক্ষে নির্ভীক সংবাদ

For media inquiries or permissions, contact: [email protected]
Follow us on Twitter/X | Facebook | LinkedIn

 

More News for You..
আরও পড়ুন | Read More

সর্বাধিক পঠিত