কুড়িগ্রামে নেই করোনা নমুনা পরীক্ষার কিট, পিসিআর ল্যাবও অচল।
ফিনিক্স নিউজ ডেস্ক | ১৩ জুন ২০২৫, কুড়িগ্রাম
নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও কুড়িগ্রাম জেলায় নমুনা পরীক্ষার কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ কিট এবং সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে জেলার কোথাও নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস ও জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস জানান, “জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের কোনও কার্যকর কিট নেই। যে ক’টি কিট মজুত ছিল, সেগুলোর মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে বর্তমানে পরীক্ষার কোনও সুযোগ নেই। আমরা নতুন করে কিট ও সরঞ্জামের চাহিদা পাঠিয়েছি এবং ঈদের ছুটিতেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন বলেন, “করোনা টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সবই মেয়াদোত্তীর্ণ। নতুন করে সরঞ্জাম চাওয়া হয়েছে। এছাড়া হাসপাতাল চত্বরে পিসিআর ল্যাবের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হলেও সেখানে যন্ত্রপাতি ও জনবল নেই। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে এটি চালু করা সম্ভব।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে স্বাস্থ্য বিভাগে থাকা বেশিরভাগ করোনা সংক্রান্ত সরঞ্জাম এখন ব্যবহার অনুপযোগী। এতে যেমন পরীক্ষার ফল সঠিক আসবে না, তেমনি নমুনা সংগ্রহকারী স্বাস্থ্যকর্মীরাও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন। যদিও সরঞ্জামের চাহিদা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে, এখনো জেলায় কিছু এসে পৌঁছেনি।
এদিকে, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি) জানিয়েছে, দেশে কোভিড-১৯-এর নতুন দুটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট XFG ও XFC শনাক্ত হয়েছে, যা সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথম শনাক্ত হওয়া JN.1 গ্রুপের এই ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
২০২৫ সালের মে মাসে কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, কুমিল্লা, খুলনা, যশোর, সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও দিনাজপুরের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে প্রায় ৭ শতাংশ রোগীর মধ্যে।
তবে আইসিডিডিআর,বি বলেছে, এই ভ্যারিয়েন্ট এখনই আতঙ্কের বড় কারণ নয়। সংস্থা পরামর্শ দিয়েছে—অসুস্থ বোধ করলে বাড়িতে থাকা, টিকা গ্রহণ, জনাকীর্ণ স্থানে মাস্ক পরিধান এবং নিয়মিত হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহারের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার।
এদিকে, সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যে ১১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনায় সর্বসাধারণকে সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।