মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন অধ্যায়: ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় নিহত ১০, বিশ্ব উদ্বেগে।
১৫ জুন ২০২৫, এডিকে/এআই ডেস্ক প্রতিবেদন
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা আরও তীব্র রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আইডিএফ-এর মুখপাত্র এফি ডিফ্রিন জানিয়েছেন, তারা ইরানের রাজধানী তেহরানে একটি সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছে, যেখানে ইরানের পারমাণবিক সদর দপ্তর অন্যতম লক্ষ্যবস্তু ছিল।
ডিফ্রিন আরও বলেন, একই সময়ে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ইয়েমেনের রাজধানী সানাতেও আক্রমণ চালিয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইয়েমেন হামলায় হুথি বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতা মুহাম্মদ আবদ আল-করিম আল-ঘামারীকে লক্ষ্য করা হয়েছে, তবে তার ভাগ্য এখনও অনিশ্চিত।
এর আগে, ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠী জানায়, তারা ইসরায়েলের “সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুতে” একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। গোষ্ঠীটির দাবি, এই হামলা ইরানের সঙ্গে সমন্বিত অভিযানের অংশ।
তবে টাইমস অফ ইসরায়েল পত্রিকার তথ্যমতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত ইয়েমেন থেকে কোনো সফল হামলার তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি।
এদিকে, রোববার রাতভর ইরানি মিসাইল হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। ছয়জন নিহত হন তেল আবিবের শহরতলি বাত ইয়ামে এবং আরও চারজন মারা যান উত্তরের তামরা শহরে।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হ্যার্ৎসোগ বাত ইয়ামের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, “ইরানিরা আমাদের ধ্বংসের ডাক দিয়ে আসছে বহু বছর ধরে। এখন বিশ্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা শান্তি চায়, না ইরানের পারমাণবিক হুমকি সহ্য করতে চায়।”
অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, “ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ যুদ্ধকে ইরানের সীমানা ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে চায়। এটি একটি বিপজ্জনক মোড়।” তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ইসরায়েল যদি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা অব্যাহত রাখে, তাহলে তা “লাল রেখা অতিক্রম করা” হিসেবে দেখা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) এই সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন। সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোদুলিদিস মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। তিনি বলেন, “EU যদি সত্যিই ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকা নিতে চায়, তবে এই মুহূর্তে নিরব থাকার সুযোগ নেই।”
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনা হয়, তাহলে এই সংঘাত বৃহত্তর অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার পরিণতি হতে পারে আরও ভয়াবহ।
সংবাদের উৎস: এপি, রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ
লিখেছেন: এডিকে/এআই রিপোর্টিং টিম