ইরান ইসরায়েল সামরিক উত্তেজনা: শক্তির ভারসাম্যে কে কোথায় দাঁড়িয়ে।
📅 ঢাকা, ১৮ জুন ২০২৫ । ✍️ প্রতিবেদক, ফিনিক্স নিউজ ডেস্ক।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বিশ্ব রাজনীতির নতুন এক সঙ্কটের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার ঘটনায় ইরানের মিসাইল হামলার পর ইসরায়েলের পাল্টা পদক্ষেপ ঘিরে সরাসরি যুদ্ধের সম্ভাবনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে চলছে বিশ্বজুড়ে আলোচনা।
শীর্ষ ২০ সামরিক শক্তির তালিকায় দুই দেশই:
সামরিক শক্তি পরিমাপকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার (GFP)-এর ২০২৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরান সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে ১৪তম এবং ইসরায়েল রয়েছে ১৭তম স্থানে।
সৈন্য সংখ্যা ও প্রতিরক্ষা বাজেট:
GFP’র তথ্য অনুযায়ী, ইরান নিয়মিত ও রিজার্ভ মিলিয়ে মোট ১১ লাখ ৮০ হাজার সৈন্যবল নিয়ে এগিয়ে আছে। ইসরায়েলের মোট সৈন্যসংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার। তবে বাজেটের দিক থেকে উল্টো চিত্র। ইসরায়েলের বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেট ২৪৪০ কোটি মার্কিন ডলার, যেখানে ইরানের বাজেট ৯৯৫ কোটি ডলার।
বিমান ও হেলিকপ্টার ক্ষমতা:
ইসরায়েলের মোট সামরিক বিমান রয়েছে ৬১২টি এবং ইরানের রয়েছে ৫৫১টি। যুদ্ধবিমানের সংখ্যাতেও ইসরায়েল এগিয়ে—২৪১টি বনাম ইরানের ১৮৬টি।
হেলিকপ্টারের দিক থেকে ইসরায়েলের সংখ্যা ১৪৬, যার মধ্যে ৪৮টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার। অন্যদিকে, ইরানের আছে ১২৯টি হেলিকপ্টার এবং মাত্র ১৩টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার।
স্থলবাহিনী শক্তি:
ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ব্যবহারে ইরান ইসরায়েলের তুলনায় এগিয়ে। ইরানের ট্যাংক ১৯৯৬টি, ইসরায়েলের ১৩৭০টি। সাঁজোয়া যানেও ইরান এগিয়ে—৬৫ হাজার ৭৬৫টি বনাম ইসরায়েলের ৪৩ হাজার ৪০৩টি।
আর্টিলারিতে ইরানের রয়েছে ৭৭৫টি রকেট আর্টিলারি ও ৫৮০টি সেলফ প্রপেলড ইউনিট। ইসরায়েলের রকেট আর্টিলারি ১৫০টি ও সেলফ প্রপেলড ৬৫০টি।
নৌবাহিনী ও সাবমেরিন:
ইরানের রয়েছে ১০১টি নৌযান, যার মধ্যে ৭টি ফ্রিগেট ও ২১টি টহল জাহাজ। ইসরায়েলের নৌযান সংখ্যা ৬৭টি, ফ্রিগেট নেই তবে রয়েছে ৪৫টি টহল জাহাজ। সাবমেরিনের সংখ্যাতেও ইরান এগিয়ে—১৯টি, ইসরায়েলের মাত্র ৫টি।
পারমাণবিক সক্ষমতা:
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)-এর তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল বিশ্বের ৯টি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের একটি। তবে ইরানের এখন পর্যন্ত কোনো স্বীকৃত পারমাণবিক অস্ত্র নেই। যদিও পশ্চিমা বিশ্ব সন্দেহ করছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে, ইরান তা অস্বীকার করে বলেছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।
সম্ভাব্য সংঘাত এবং বৈশ্বিক উদ্বেগ:
ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং গোটা বিশ্বকেই প্রভাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। সামরিক শক্তির ভারসাম্য বিচার করলে দেখা যায়—ইরান জনশক্তি ও স্থলবাহিনীতে এগিয়ে, আর ইসরায়েল প্রযুক্তি, বিমান ও পারমাণবিক শক্তিতে অগ্রণী।
বিশ্লেষকদের মতে, এখনই কূটনৈতিক উদ্যোগ না নিলে এই দ্বন্দ্ব রূপ নিতে পারে একটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক যুদ্ধে।
📌 ফিনিক্স নিউজ ডেস্ক:
📞 যোগাযোগ: [email protected]