ইরানে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ, উত্তেজনা প্রশমন চায় ইউরোপীয় নেতারা।
প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৫ : ফিনিক্স নিউজ ডেস্ক।
বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন:
সম্প্রতি ইরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলার প্রতিবাদে মুসলিম দেশসহ বিশ্বজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের স্রোত বয়ে গেছে। শুক্রবার ইরান, ইরাক, বাংলাদেশসহ একাধিক দেশে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান দিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ করেন। এই বিক্ষোভগুলো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে এবং সাম্প্রতিক সংকটকে বৈশ্বিক সংকটের আকার দিয়েছে।
বিক্ষোভের তীব্রতা ও প্রসার:
ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পতাকা ও ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন। বিক্ষোভকারীরা ‘মজলুম ফিলিস্তিন বিজয়ী হবে’, ‘ইসরায়েল হিংস্র জঙ্গি’, ‘মুক্তি চাই প্যালেস্টাইন’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইরাকের বাইতুলমুকাদ্দাস ও বিভিন্ন শহরে এবং বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ অন্য কিছু অঞ্চলেও একই রকম প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিক্ষোভগুলো কেবলমাত্র সাম্প্রতিক হামলার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক অবস্থা থেকে উদ্ভূত গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের বহিঃপ্রকাশ।
ইউরোপীয় দেশগুলোর কূটনৈতিক পদক্ষেপ:
বিক্ষোভের পাশাপাশি উত্তেজনা প্রশমনের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করেছে। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকটি ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের অংশ ছিল, যেখানে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আলোচনা হয়।
বৈঠকে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা দ্রুত প্রশমনের আহ্বান জানানো হয়। বিশেষ করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে, যেখানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষক মন্তব্য:
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্ব এখন কেবল দুটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা সংকটের রূপ নিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হলে তা সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এজন্য দ্রুত এবং কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভের মাত্রা এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা দ্রুত বাড়ার কারণে বর্তমান পরিস্থিতি আগামী দিনে আরও সংকটময় ও জটিল রূপ নিতে পারে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সর্বাত্মক সহায়তা ও মধ্যস্থতা আবশ্যক বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন।
সংক্ষেপে, ইরানে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে তীব্র করে তুলেছে। ইউরোপীয় নেতারা কূটনৈতিক মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করতে কাজ করছে, তবে বর্তমান সংকট দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তা বিশ্ব মঞ্চে জোরালো হচ্ছে।
ফিনিক্স নিউজ – সঠিক তথ্যের জন্য আপনার নির্ভরযোগ্য উৎস।