ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন, ৩১ আগস্ট বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে।
Finix News Desk
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫ | বেলা ১১:০০
আগামী ৩১ আগস্ট প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসছেন ইতালির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। সফরকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই সফরকে ঘিরে ঢাকা-রোম কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন দিগন্তের সূচনা আশা করছেন বিশ্লেষকরা।
সফরসূচি:
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী মেলোনি ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। এরপর ৩১ আগস্ট সকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক এবং আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। সফর শেষে তিনি সেদিন বিকেলেই ঢাকা ত্যাগ করবেন।
আলোচ্যসূচির মূল বিষয়সমূহ:
এই সফরের মূল আলোচ্যসূচিতে রয়েছে:
- বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা
- অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ
- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে ইতালির অংশগ্রহণ বৃদ্ধি
- নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভিবাসন নীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে।
অভিবাসন ও কর্মসংস্থানের গুরুত্ব:
গত মে মাসে ইতালি ও বাংলাদেশের মধ্যে সই হওয়া ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি’ সমঝোতা স্মারক (MoU) এই সফরের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এই স্মারকের লক্ষ্য হলো:
- ইতালিতে বৈধ অভিবাসনের পথ সহজ করা
- ‘সিজনাল’ ও ‘নন-সিজনাল’ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ
- কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি
বাংলাদেশের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক:
বর্তমানে বাংলাদেশ-ইতালি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তৈরি পোশাক খাত ছাড়াও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকস এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি রয়েছে। ইতালির উন্নত প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা ব্যবহারে আগ্রহী বাংলাদেশ সরকার।
দুই দেশের যৌথ বাণিজ্যিক কাউন্সিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সম্ভাব্য সহযোগিতা:
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, সফরের আলোচনায় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতের সহযোগিতার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ, সাইবার নিরাপত্তা এবং তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে সমঝোতা তৈরি হতে পারে।
কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ:
এই সফরকে অনেকেই ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখছেন। এটিই হবে পশ্চিমা বিশ্বের কোনো শীর্ষ নেতার বর্তমান সরকারের আমলে প্রথম আনুষ্ঠানিক ঢাকা সফর।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৯৮ সালে ইতালির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রোদি ঢাকা সফর করেছিলেন।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির এই সফর শুধু একটি কূটনৈতিক সৌজন্য সফর নয়, বরং বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্কের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। অভিবাসন, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা খাতে উন্নয়নমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলে এই সফরের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসূ হবে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
📢 Finix News – সত্য বলার সাহস
🌐 www.finixnews.com
🔗 আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া লিংক:
✅ সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন ও মন্তব্য করুন। আপনার মতামতই আমাদের শক্তি।
📲 Finix News | সত্যের সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।