অন্ধকার জীবনের গল্প: শ্বেতা বসু প্রসাদের অন্ধকার জীবনের চলচ্চিত্রসম উত্থান-পতন !
Finix News ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৫
একজন শিল্পীর জীবন কেবল ক্যামেরার ঝলকানিতেই সীমাবদ্ধ নয়, তার পেছনে থাকে বহু না বলা অধ্যায়। এমনই এক বিস্ময়কর জীবনের নাম শ্বেতা বসু প্রসাদ, যিনি ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের এক সময়ের উজ্জ্বল শিশু তারকা থেকে হয়েছেন আলোচিত বিতর্কের মুখ।
২০০২ সালে বিশাল ভরদ্বাজের পরিচালনায় ‘মাকড়ি’ সিনেমায় দ্বৈত চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে শ্বেতার যাত্রা শুরু হয়। এই ছবির জন্য তিনি অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, যা তার ক্যারিয়ারের এক ব্যতিক্রমী সূচনা হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে সে উজ্জ্বলতা ম্লান হতে শুরু করে।
যে বিতর্ক তাকে আলোচনার কেন্দ্রে আনে:
২০১৪ সালের আগস্ট মাস। হায়দরাবাদের একটি হোটেল থেকে ‘অনৈতিক কর্মকাণ্ডে’ জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন শ্বেতা। ঘটনার খবর ভারতের গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। শ্বেতা জানান, তিনি একটি ষড়যন্ত্রের শিকার। এমনকি ভারতীয় মিডিয়ার একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে অনেককেই টিকে থাকতে গিয়ে আপস করতে হয়।
পরে আদালতের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এমন কোনো প্রমাণ নেই যা তার বিরুদ্ধে অভিযোগকে প্রমাণ করতে পারে। কিছু মাসের মধ্যেই তিনি মুক্তি পান এবং আইনি দিক থেকে পুরোপুরি নির্দোষ প্রমাণিত হন।
পুনরুদ্ধার ও প্রত্যাবর্তনের সাহসিকতা:
সাধারণভাবে দেখা যায়, এমন ঘটনাগুলো একজন অভিনেত্রীর ক্যারিয়ার একেবারেই ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু শ্বেতা তার ব্যতিক্রম। জীবনের অন্ধকার অধ্যায় পেরিয়ে তিনি নিজেকে গুটিয়ে না নিয়ে ফিরেছেন অভিনয়ের জগতে।
২০১৯ সালে ‘দ্য তাশখন্দ ফাইলস’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের নজরে আসেন তিনি। ২০২২ সালে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এ তার উপস্থিতি প্রশংসিত হয়। ওয়েব সিরিজ দুনিয়াতেও তার বিচরণ শুরু হয়, বিশেষ করে ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস’ সিজন ৪-এ পঙ্কজ ত্রিপাঠীর সঙ্গে অভিনয় ছিল প্রশংসনীয়।
বাংলা চলচ্চিত্র ‘এক নদীর গল্প’-এ তিনি মিঠুন চক্রবর্তী ও যিশু সেনগুপ্তর সঙ্গে কাজ করেন, যা তার বহুমাত্রিক প্রতিভার প্রমাণ দেয়।
একজন অভিনেত্রী, এক সংগ্রামী নারী:
শ্বেতা বসুর জীবন কেবল অভিনেত্রী হিসেবে নয়, একজন সংগ্রামী নারীর প্রতিচ্ছবি। অল্প বয়সে খ্যাতি, হঠাৎ পতন, তারপর নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলা, সব মিলিয়ে তার জীবন বাস্তব এক চলচ্চিত্রের গল্প হয়ে দাঁড়ায়।
তার কাহিনি প্রমাণ করে, কর্ম, নিষ্ঠা ও সাহস থাকলে অতীতের ভুল বা বিতর্ক পেছনে ফেলে নতুন করে শুরু করা সম্ভব।